Accounting methods
হিসাব পদ্ধতি
হিসাব পদ্ধতি হল সেই প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেনগুলি লিপিবদ্ধ, শ্রেণীবদ্ধ, সংক্ষিপ্তকরণ এবং প্রতিবেদন করা হয়। এই পদ্ধতিগুলি আর্থিক তথ্যের সঠিকতা এবং নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করে, যা ব্যবহারকারীদের অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং ক্রিপ্টোফিউচার্স ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে হিসাব পদ্ধতি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই বাজারগুলি অত্যন্ত পরিবর্তনশীল এবং জটিল।
হিসাব পদ্ধতির মৌলিক উপাদান
হিসাব পদ্ধতির মূল উপাদানগুলি হলো:
- লেনদেন সনাক্তকরণ ও পরিমাপকরণ: প্রথমত, সমস্ত আর্থিক লেনদেন সঠিকভাবে সনাক্ত করতে হয় এবং তাদের আর্থিক মূল্য নির্ধারণ করতে হয়।
- হিসাব জার্নাল: লেনদেনগুলি তারিখের ক্রমানুসারে হিসাব জার্নালে লিপিবদ্ধ করা হয়। এটি একটি প্রাথমিক রেকর্ড যেখানে প্রতিটি লেনদেনের ডেবিট ও ক্রেডিট দিক উল্লেখ করা হয়। হিসাব জার্নাল
- খতিয়ান: হিসাব জার্নাল থেকে তথ্য নিয়ে খতিয়ানে স্থানান্তর করা হয়। খতিয়ান প্রতিটি অ্যাকাউন্টের (যেমন: নগদ, ব্যাংক, দেনাদার, পাওনাদার) আলাদাভাবে বিবরণ রাখে। খতিয়ান
- trial balance (নিয়ন্ত্রণ তালিকা): এটি খতিয়ানের জেরের একটি তালিকা, যা হিসাবের গাণিতিক সঠিকতা যাচাই করতে ব্যবহৃত হয়। নিয়ন্ত্রণ তালিকা
- আর্থিক বিবরণী: হিসাব পদ্ধতির চূড়ান্ত ফলাফল হলো আর্থিক বিবরণী, যা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা ও কর্মক্ষমতা সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আয় বিবরণী, উদ্বৃত্ত পত্র এবং নগদ প্রবাহ বিবরণী। আর্থিক বিবরণী
হিসাব পদ্ধতির প্রকারভেদ
বিভিন্ন ধরনের হিসাব পদ্ধতি প্রচলিত আছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:
- একক হিসাব পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে প্রতিটি লেনদেনকে আলাদাভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়।
- দ্বৈত হিসাব পদ্ধতি: এটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত পদ্ধতি, যেখানে প্রতিটি লেনদেনের দুটি দিক – ডেবিট ও ক্রেডিট – লিপিবদ্ধ করা হয়। এই পদ্ধতি হিসাব সমীকরণ (সম্পদ = দায় + মালিকের স্বত্ব) মেনে চলে। দ্বৈত হিসাব পদ্ধতি
- নগদ হিসাব পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে শুধুমাত্র নগদ লেনদেনগুলি লিপিবদ্ধ করা হয়।
- প্র accrual (হিসাবকালে) পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে নগদ লেনদেন ছাড়াও আয় ও ব্যয় যখনই অর্জিত বা সংঘটিত হয়, তখনই লিপিবদ্ধ করা হয়। accrual পদ্ধতি
ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং ক্রিপ্টোফিউচার্স ট্রেডিংয়ের জন্য হিসাব পদ্ধতি
ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং ক্রিপ্টোফিউচার্স ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে হিসাব পদ্ধতি সাধারণ হিসাব পদ্ধতি থেকে কিছুটা ভিন্ন। এর কারণ হলো:
- অস্পষ্টতা: ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলির অভাবের কারণে হিসাব সংক্রান্ত অস্পষ্টতা দেখা যায়।
- পরিবর্তনশীলতা: ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্য অত্যন্ত দ্রুত পরিবর্তনশীল, যা হিসাবের জটিলতা বাড়ায়।
- নিরাপত্তা ঝুঁকি: ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেট এবং এক্সচেঞ্জগুলি হ্যাকিংয়ের ঝুঁকিতে থাকে, যা সম্পদের সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করে।
এই বিষয়গুলি বিবেচনা করে, ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং ক্রিপ্টোফিউচার্স ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত হিসাব পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করা যেতে পারে:
- গড় খরচ পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনার সময় প্রতিটি ক্রয়ের গড় খরচ হিসাব করা হয়। যখন ক্রিপ্টোকারেন্সি বিক্রি করা হয়, তখন এই গড় খরচ ব্যবহার করে লাভ বা ক্ষতি নির্ণয় করা হয়। গড় খরচ পদ্ধতি
- প্রথম-ইন, প্রথম-আউট (FIFO) পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে প্রথমে কেনা ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রথমে বিক্রি করা হয়েছে বলে ধরা হয়।
- শেষ-ইন, প্রথম-আউট (LIFO) পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে প্রথমে কেনা ক্রিপ্টোকারেন্সি পরে বিক্রি করা হয়েছে বলে ধরা হয়। (উল্লেখ্য, LIFO পদ্ধতি ট্যাক্স আইনের অধীনে অনুমোদিত নাও হতে পারে)। LIFO পদ্ধতি
- নির্দিষ্ট পরিচিতি পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে কোন নির্দিষ্ট ক্রিপ্টোকারেন্সি বিক্রি করা হয়েছে, তা চিহ্নিত করা হয়।
পদ্ধতি | সুবিধা | অসুবিধা | |
---|---|---|---|
গড় খরচ পদ্ধতি | হিসাব করা সহজ | প্রকৃত লাভ বা ক্ষতি নাও দেখাতে পারে | |
FIFO পদ্ধতি | ট্যাক্স সুবিধা পাওয়া যেতে পারে | জটিল হতে পারে | |
LIFO পদ্ধতি | উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ট্যাক্স সাশ্রয় হতে পারে | ট্যাক্স আইনের অধীনে অনুমোদিত নাও হতে পারে | |
নির্দিষ্ট পরিচিতি পদ্ধতি | সবচেয়ে নির্ভুল ফলাফল দেয় | সময়সাপেক্ষ এবং জটিল |
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ
- কর (Tax) হিসাব: ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং থেকে অর্জিত লাভ বা ক্ষতির উপর কর প্রযোজ্য হতে পারে। কর আইনের সঠিক জ্ঞান এবং হিসাব রাখা অত্যন্ত জরুরি। ক্রিপ্টো ট্যাক্স
- অডিট: আর্থিক বিবরণীর নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করার জন্য নিয়মিত অডিট করা উচিত। অডিট
- নিয়ন্ত্রণ: ক্রিপ্টোকারেন্সি সংক্রান্ত হিসাবগুলির উপর অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করা উচিত। অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ
- ব্লকচেইন বিশ্লেষণ: লেনদেনের স্বচ্ছতা এবং নির্ভুলতা নিশ্চিত করার জন্য ব্লকচেইন বিশ্লেষণ ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্লকচেইন বিশ্লেষণ
- ওয়ালেট ব্যবস্থাপনা: ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেটগুলির সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ক্রিপ্টো ওয়ালেট
ক্রিপ্টোফিউচার্স ট্রেডিংয়ের হিসাব পদ্ধতি
ক্রিপ্টোফিউচার্স ট্রেডিংয়ের হিসাব পদ্ধতি সাধারণ ফিউচার্স ট্রেডিংয়ের মতোই। এখানে কিছু অতিরিক্ত বিষয় বিবেচনা করতে হয়:
- মার্জিন হিসাব: ফিউচার্স ট্রেডিংয়ের জন্য মার্জিন অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রাখতে হয়। এই মার্জিন হিসাবের সঠিক ব্যবস্থাপনা জরুরি। মার্জিন ট্রেডিং
- চিহ্নিতকরণ-থেকে-বাজার (Mark-to-Market): প্রতিদিন ফিউচার্স চুক্তির মূল্য পুনরায় মূল্যায়ন করা হয় এবং লাভ বা ক্ষতি হিসাব করা হয়। Mark-to-Market
- settlement (নিষ্পত্তি): ফিউচার্স চুক্তির নিষ্পত্তি তারিখ অনুযায়ী লাভ বা ক্ষতি পরিশোধ করা হয়। নিষ্পত্তি
- हेजिंग (ঝুঁকি হ্রাস): ফিউচার্স চুক্তি ব্যবহার করে পোর্টফোলিওতে ঝুঁকির পরিমাণ কমানো যায়। হেজিং
- আর্বিট্রেজ: বিভিন্ন এক্সচেঞ্জে একই ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্যের পার্থক্য থেকে লাভ করার সুযোগ থাকে। আর্বিট্রেজ
প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ এবং ট্রেডিং ভলিউম বিশ্লেষণ
হিসাব পদ্ধতির পাশাপাশি, ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিংয়ে প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ এবং ট্রেডিং ভলিউম বিশ্লেষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- চার্ট প্যাটার্ন: বিভিন্ন চার্ট প্যাটার্ন (যেমন: হেড অ্যান্ড শোল্ডারস, ডাবল টপ, ডাবল বটম) ব্যবহার করে ভবিষ্যতের মূল্য নির্ধারণের চেষ্টা করা হয়। চার্ট প্যাটার্ন
- মুভিং এভারেজ: মুভিং এভারেজ ব্যবহার করে মূল্যের প্রবণতা (trend) নির্ণয় করা হয়। মুভিং এভারেজ
- আরএসআই (RSI): রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইনডেক্স (RSI) ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি বোঝা যায়। রিলেটিভ স্ট্রেন্থ ইনডেক্স
- MACD: মুভিং এভারেজ কনভারজেন্স ডাইভারজেন্স (MACD) ব্যবহার করে ট্রেডিংয়ের সংকেত পাওয়া যায়। MACD
- ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট: ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট ব্যবহার করে সম্ভাব্য সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল নির্ধারণ করা হয়।ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট
- ট্রেডিং ভলিউম: ট্রেডিং ভলিউম বিশ্লেষণ করে বাজারের চাহিদা ও সরবরাহ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। ট্রেডিং ভলিউম
- অর্ডার বুক: অর্ডার বুক বিশ্লেষণ করে বিড এবং আস্ক প্রাইসের মধ্যেকার পার্থক্য বোঝা যায়। অর্ডার বুক
- গভীরতা (Depth): অর্ডার বুকের গভীরতা বিশ্লেষণ করে বাজারের লিকুইডিটি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। বাজারের গভীরতা
- স্প্রেড: বিড এবং আস্ক প্রাইসের মধ্যেকার পার্থক্যকে স্প্রেড বলা হয়। স্প্রেড
উপসংহার
ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং ক্রিপ্টোফিউচার্স ট্রেডিংয়ের জন্য সঠিক হিসাব পদ্ধতি অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি কেবল আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে না, বরং কর সংক্রান্ত জটিলতা এড়াতে এবং সঠিক বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ এবং ট্রেডিং ভলিউম বিশ্লেষণের মাধ্যমে আরও ভালোভাবে বাজারের গতিবিধি বোঝা যায় এবং লাভজনক ট্রেডিংয়ের সুযোগ তৈরি হয়।
ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েন ইথেরিয়াম ব্লকচেইন ফিনান্স বিনিয়োগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পোর্টফোলিও মার্কেট ক্যাপ বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন হিসাববিজ্ঞান আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ডিজিটাল সম্পদ ক্রিপ্টো অর্থনীতি ট্রেডিং কৌশল ঝুঁকি বিশ্লেষণ বাজারের পূর্বাভাস বৈশ্বিক অর্থনীতি
সুপারিশকৃত ফিউচার্স ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম
প্ল্যাটফর্ম | ফিউচার্স বৈশিষ্ট্য | নিবন্ধন |
---|---|---|
Binance Futures | 125x পর্যন্ত লিভারেজ, USDⓈ-M চুক্তি | এখনই নিবন্ধন করুন |
Bybit Futures | চিরস্থায়ী বিপরীত চুক্তি | ট্রেডিং শুরু করুন |
BingX Futures | কপি ট্রেডিং | BingX এ যোগদান করুন |
Bitget Futures | USDT দ্বারা সুরক্ষিত চুক্তি | অ্যাকাউন্ট খুলুন |
BitMEX | ক্রিপ্টোকারেন্সি প্ল্যাটফর্ম, 100x পর্যন্ত লিভারেজ | BitMEX |
আমাদের কমিউনিটির সাথে যোগ দিন
@strategybin টেলিগ্রাম চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন আরও তথ্যের জন্য। সেরা লাভজনক প্ল্যাটফর্ম – এখনই নিবন্ধন করুন।
আমাদের কমিউনিটিতে অংশ নিন
@cryptofuturestrading টেলিগ্রাম চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন বিশ্লেষণ, বিনামূল্যে সংকেত এবং আরও অনেক কিছু পেতে!